মাথা গোঁজার ঠাঁই পেলেন আত্মপ্রত্যয়ী মা-ছেলে

লালপুর (নাটোর) প্রতিনিধি/
নাটোরের লালপুরে গৃহহীন আত্মপ্রত্তয়ী মা-ছেলেকে ঘর নির্মাণের ভিত্তি প্রস্থর স্থাপন করেছেন জেলা প্রশাসক মো: শামীম আহমেদ।
সোমবার ( ৯ আগষ্ট) উপজেলার আব্দুলপুর গ্রামে মা সাগরি খাতুন ও ছেলে সাইদুর রহমানের হাতে আনুষ্ঠানিকভাবে ৪০ হাজার টাকার চেক হস্তান্তর করেন জেলা প্রশাসক।
এসময় জেলা প্রশাসক মো: শামীম আহমেদ বলেন, সাগরি খাতুনের স্বামী মারা যাওয়ার পর তার ৩ মাস বয়সী শিশু সন্তান সাইদুর রহমানকে নিয়ে সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন। সাইদুর বাল্যকাল থেকেই ইটের ভাটায় কাজ করে ও ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে রিক্সা চালিয়ে পড়াশোনার খরচ যুগিয়েছেন। সে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক শেষ করে স্নাতকোত্তরে পড়াশোনা করছেন। সাইদুর এবার ৪১ তম বিসিএস পিলিমিনারী পরিক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে। আশা করি সে সফল হবে এবং মা-ছেলে দুইজনই অন্যদের জন্য তিনি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবেন।
গত চার বছর আগে ‘প্যাডেলের সঙ্গে স্বপ্ন ঘোরে’ শিরোনামে এই মা-ছেলের সংগ্রামী জীবনের গল্প প্রকাশিত হলে তৎকালীন নাটোর জেলা প্রশাসক মসিউর রহমান তাদের পাশে দাঁড়ান। সেই সময়ে নগদ অর্থ সহ বাড়ী নির্মাণের জন্য খাস জমি বন্দোবস্ত করে দেন। কিন্তু আইনি জটিলতায় সেই জমি দখন পান নি সাইদুর। চার বছর পর তার ১ কাঠা পৈতৃকসম্পত্তিতে গৃহ নির্মাণের উদ্যোগে নেন বর্তমান জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ।
সাইদুরের তিনমাস বয়সে তাঁর বাবা ট্রেনে কাটা পড়ে মারা যান। এরপর ছেলেকে নিয়ে মা সাগরী খাতুনের শুরু হয় জীবনসংগ্রাম। ভাত-বস্ত্রের জন্য কখনো মানুষের বাড়িতে কাজ করেছেন, কখনো নির্মাণশ্রমিকের কাজ করতে হয়েছে। অভাব-অনটনের মধ্যেও তিনি স্বপ্ন দেখতেন ছেলেকে নিয়ে।
সেই ছেলে এবার ৪১ তম বিসিএস পিলিমিনারী পরিক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আশরাফুল ইসলাম, লালপুর উপজেলা চেয়ারম্যান ইসহাক আলী, উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা (ভারপ্রাপ্ত) শাম্মী আক্তার, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকতা মাহফুজুর রহমান, ত্রাণ ও পূর্ণবাসন কর্মকতা মো: সালাউদ্দিন আল ওয়াদুদ, চংধুপইল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বেলাল হোসেন প্রমূখ।