চুমকি’র দেশত্যাগ ঠেকাতে পুলিশকে দুদকের চিঠি

 

বিশেষ প্রতিবেদ /
হত্যা মামলায় কারাগারে থাকা টেকনাফের আলোচিত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি, বরখাস্ত) প্রদীপ কুমার দাশের স্ত্রী গা ঢাকা দিয়েছেন।

অবৈধ সম্পদ অর্জনের দায়ে প্রদীপ দম্পতির বিরুদ্ধে দুদকের মামলা দায়েরের পর থেকেই চুমকি আত্মগোপনে রয়েছেন বলে জানা গেছে।
তবে চুমকি যাতে দেশ ছেড়ে পালাতে না পারেন, সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পুলিশকে দাপ্তরিক চিঠি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

বুধবার (২ সেপ্টেম্বর) ওসি প্রদীপ দম্পতির বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের দায়ে দায়ের করা মামলার বাদী দুদক জেলা সমন্বিত কার্যালয় চট্টগ্রাম-২ এর সহকারী পরিচালক রিয়াজ উদ্দিন বিষয়টি রাইজিংবিডিকে নিশ্চিত করেছেন।

দুদক সূত্র জানায়, প্রায় চার কোটি টাকা অবৈধ সম্পদ অর্জনের দায়ে গত ২৩ আগস্ট প্রদীপ কুমার দাশ ও তার স্ত্রী চুমকি কারনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) জেলা সমন্বিত কার্যালয় চট্টগ্রাম-২ এর সহকারী পরিচালক রিয়াজ উদ্দিন বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন।

এ মামলার এজাহারে বলা হয়, স্বামী প্রদীপ কুমার দাশের ঘুষ-দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অপরাধলব্ধ অর্থ স্থানান্তর, হস্তান্তর ও রূপান্তরপূর্বক একে অপরের সহযোগিতায় ভোগদখলে রেখে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন চুমকি কারন। এ মামলা হওয়ার পর থেকেই চুমকি কারন লাপাত্তা। চট্টগ্রাম নগরীর পাথরঘাটায় অবস্থিত প্রদীপ দম্পতির ছয় তলা বাড়ি লক্ষ্মীকুঞ্জে সন্তান নিয়ে বসবাস করতেন চুমকি। সেই বাড়িতে খোঁজ নিয়েও চুমকির কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি।

তবে স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, মূলত প্রদীপ গ্রেপ্তার হওয়ার পর থেকেই চুমকি আর বাড়িতে থাকছেন না। তিনি কোথায় থাকছেন এ ব্যাপারে কারো কাছে কোনো তথ্য নেই।

এদিকে, দুদক চুমকির বিরুদ্ধে মামলা করার পর থেকে তার সন্ধানে রয়েছে দুদক। চুমকি কারন পলাতক থাকায় তিনি যাতে কোনভাবে দেশ ত্যাগ করতে না পারেন সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পুলিশকে চিঠি দিয়েছে দুদক।

দুদক চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক রিয়াজ উদ্দিন জানান, চুমকি কারন যাতে দেশ ছেড়ে পালাতে না পারেন সে ব্যাপারে গত ৩১ আগস্ট পুলিশ সদর দপ্তরে চিঠি দেওয়া হয়েছে। সেই চিঠির ভিত্তিতে পুলিশ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।

এদিকে, চিঠি দেওয়ার আগেই চুমকি দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন কি-না সে ব্যাপারে তথ্য নেই সংশ্লিষ্টদের কাছে। চুমকি কারনের বাংলাদেশ ছাড়াও ভারতের নাগরিকত্বও রয়েছে বলে জানা গেছে।

দুদক সূত্র জানায়, মূলত ২০১৯ সাল থেকেই ওসি প্রদীপ দম্পতির বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। ওই বছরের ৯ এপ্রিল প্রদীপ কুমার দাশ ও তার স্ত্রী চুমকি কারনের বিরুদ্ধে সম্পদবিবরণী চেয়ে নোটিশ দেওয়া হয়। ওই বছরের ১২ মে তারা দুদকে সম্পদ বিবরণী জমা দেন। ওই সম্পদ বিবরণীতে ৪ কোটি ২২ লাখ ৪৮ হাজার ৮৬৯ টাকার স্থাবর অস্থাবর সম্পদ থাকার তথ্য প্রকাশ করেন তারা। পরবর্তী সময়ে দুদকের অনুসন্ধানে সর্বমোট ৩ কোটি ৯৫ লাখ ৫ হাজার ৬৩৫ টাকার সম্পদ জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের অস্থিত্ব পাওয়ার পর এ ব্যাপারে প্রদীপ দম্পতির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে দুদক।

উল্লেখ্য, অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা মেজর সিনহা হত্যা মামলায় ওসি প্রদীপ বর্তমানে কক্সবাজার জেলা কারাগারে বন্দি রয়েছেন।