নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ ঈদে বাড়ি ফেরা নয়, আবার পরিবারের সাথে ঈদের আনন্দ শেষে কর্মস্থলে যাবার তাড়াও নেই। জঠর জ¦ালায় গাদাগাদি করে ধান কাটতে যাবার সময়ও এখন নয় । তারপরেও শুক্রবার সকারে তিল ধারনের ঠাঁই ছিলনা চাঁপাই নবাবগঞ্জ-খুলনাগামী মহানন্দা এক্সপ্রেস মেইল ট্রেনে। ট্রেনের ইঞ্জিন, ছাদ, বগীর ভেতর ও হাতলে বাদুর ঝোলা হয়ে আছে হাজার হাজার মানুষ। সকলেই ছুটছেন কুষ্টিয়ার কুমারখালি উপজেলার ছেঁউড়িয়ায়। মরমি সাধক মানবতাবাদী লালন সাঁইজির ১৩৫তম প্রয়াণ দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে।
লালন ভক্তরা দল ধরে গাইছিলেন-
‘মানুষ ছাড়া ক্ষ্যাপা রে তুই মূল হারাবি, মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি।
আবার কেউ কেউ গাইছিলেন, দিন থাকিতে দিনের সাধন কেন করলে না, সময় গেলে সাধন হবে না। গোটা ট্রেন জুড়ে লালনের গানে মত্তছিলেন লালন ভক্তরা।
শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০ টায় মহানন্দা এক্সপ্রেস মেইল ট্রেন নাটোরের লালপুর উপজেলার আজিমনগর রেলওয়ে স্টেশনে প্রায় ১০ মিনিট যাত্রা বিরতি করলে স্টেশনে দাঁড়িয়ে এ দৃশ্য দেখছিলেন সাধারণ মানুষ। লালন ভক্তদের অনেকেই ভীড় ঠেলে ট্রেনে উঠতে না পেরে কষ্টে ভেঙ্গে পড়েন।
উপজেলার গন্ডবিল গ্রামের লালনভক্ত মাজেদা পাগলী ও তার সাথের কয়েক জন ট্রেনে চড়তে না পেরে আজিমনগর স্টেশনে দাঁড়িয়ে ছিলেন, কিছু জিজ্ঞাসা করার আগেই বলে উঠলেন ‘মন যেখানে চায়, ছুটে চলনা সেথা যাই। প্রতিবছর ১০দিন আগেই সাঁইজির মাজারে যায়। ট্রেনে উঠতে না পেরে কষ্ট পাচ্ছি। কখন যে যাব।’
ট্রেনের ইঞ্জিনের বাইরে হাতল ধরে ঝুলে ছিলেন মকলেছ নামের একভক্ত। তিনি জানালেন, প্রতিবছরই লালন সাঁইয়ের স্বরণোৎসবে যোগ যাই। এবারো যাচ্ছি চাঁপাই নবাবগঞ্জ থেকে। ট্রেনে ঝুলে ঝুলে যেতেও কষ্ট নেই। শুধু আখড়ায় পৌছাতে পারলেই হয়।