লালপুরে পাট জাগ দেওয়া নিয়ে বিপাকে চাষীরা

মিঠুন ইসলাম/
নাটোরের লালপুরে দীর্ঘদিন বৃষ্টির পানি না হওয়ায় তীব্র খরায় নদী-নালা ,খাল -বিল শুকিয়ে পানি শূন্য হওয়ায় পাট জাগ দেওয়া নিয়ে বিপাকে কৃষকরা।
বর্ষা মৌসুমেও পর্যাপ্ত পানি নেই নদী নালায় । এ অবস্থায় চাষি সোনালি আঁশ পাট জাগ দিতে না পেরে জমিতেই ফেলে রাখতে বাধ্য হচ্ছেন। অনেকেই কাঁচা পাট পরিবহন করে বিলের বিভিন্ন খালের নিচু এলাকায় নিয়ে জাগ দিতে বাধ্য হচ্ছেন। এতে পরিবহন ও শ্রমিকবাবদ পাটের উৎপাদন খরচ বেড়ে যাচ্ছে।
 কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে,এবার লালপুর উপজেলায় ৫ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও চাষ হয়েছে ৭ হাজার ৪২০ হেক্টর জমিতে। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১ হাজার ৯শ ২০ হেক্টর বেশি। এ বছর হেক্টর প্রতি ২.৪ মেক্ট্রিক টন হারে ১৭ হাজার ৮শ ৮ মেক্ট্রিক টন পাটের আঁশ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এবার অন্যান্য বছরের তুলনায় পাটের ফলনও ভালো হয়েছে, কিন্তু পাট জাগ দেওয়ার মতো যথেষ্ট জায়গা না থাকায় পাটে লচের আশংকা করছেন পাট চাষিরা।
জানা গেছে, সম্প্রতি আবহাওয়া ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে মধ্য আষাঢ় মাসেও লালপুরে বন্যা হয়নি।  বৃষ্টিপাত হলে লালপুরের নিম্নাঞ্চলে খাল, ডোবা, নালায় কিছু পানি পাওয়া যায়। কিন্তু দীর্ঘদিন যাবত কোনো বৃষ্টির পানি না হওয়ায় খালবিল, ডোবা-নালা শুঁকে থাকায় বিভিন্ন জায়গায় দেখা গেছে  পাট জাগ দেওয়ার জন্য কৃষকরা কৃত্রিম উপায়ে মটর দিয়ে পানি তুলে পাট জাগ দেওয়ার জায়গা প্রস্তুত করছে। এতে কৃষকদের অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় হচ্ছে বলে জানা যায়।
অতীতে এই সোনালী আঁশ বিক্রয় করে প্রচুর  বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হতো। কিন্তু আস্তে আস্তে পাটের কদর কমিয়ে, পাটের বিকল্প হিসেবে প্লাস্টিকের দড়ি প্লাস্টিকের অন্যান্য দ্রব্য ব্যবহারের ফলে পাট হারিয়েছে তার সোনালী অতীত।এসব অস্বাস্থ্যকর প্লাষ্টিকের দ্রব্যের ব্যবহারের ফলে যেমন করে আমাদের সোনালী আঁশ পাটের কদর কমেছে, ঠিক তেমনি অতিরিক্ত প্লাষ্টিক ব্যবহারের ফলে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ধীরে ধীরে বিভিন্ন ক্যান্সারের মতো মারাত্মক রোগ ও  মৃত্যু ঝুঁকির দিকে ধাবিত হচ্ছে।