দৌলতপুরে পদ্মা নদীতে বালি কাটা বন্ধে প্রশাসনের অভিযান

বিশেষ প্রতিবেদক/
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে অবৈধভবে বালি উত্তোলন বন্ধে পদ্মা নদীতে দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শারমিন আক্তার অভিযান চালিয়েছেন। এসময় দৌলতপুর সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আজগর আলী উপস্থিত ছিলেন।
মঙ্গলবার ৮ সেপ্টেম্বর বিকেলে ড্রেজার মেশিন দিয়ে অবৈধভাবে পদ্মা নদীতে বালি উত্তোলন করার অভিযোগে পেয়ে দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শারমিন আক্তার-এর নেতৃত্বে একটি টিম ফিলিপনগর ইউনিয়নের গোলাবাড়ির এলাকায় পদ্মা নদীতে অভিযান চালায়।
এসময় বালি উত্তোলনকারী চক্র প্রশাসনের কর্মকর্তাদের উপস্থিতি টের পেয়ে বালি উত্তোলন কাজে ব্যবহৃত ড্রেজারসহ নৌকা ফেলে পালিয়ে যায়। পরে অবৈধভাবে বালি উত্তোলন কাজে ব্যবহৃত লোহার পাইপসহ ড্রেজার মেশিনের যন্ত্রাংশ ভেঙ্গে ফেলা হয়। পাশাপাশি উপস্থিত এলাকাবাসীকে উদ্দেশ্য করে অবৈধভাবে বালি উত্তোলন বন্ধে সতর্কতা ও কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়।
নদী ভাঙ্গনে দৌলতপুরের ফিলিপনগরের মানুষ বিপর্যস্ত। গত প্রায় ৩০ বছর ধরে মানুষের বসত ভিটা ভেঙ্গেছে ৩/৪ বার করে। তারও দুই যুগ আগে থেকে ভেঙ্গেছে আবাদী জমি। এ সময়ে যাদের সম্বল আছে তারা জেলা শহর বা আশোপাশের উপজেলাতে বসতবাড়ি তৈরি করে। যাদের দূরে যাওয়ার সম্বল ছিলনা তারা থেকে যায় ফিলিপনগরে। ভাঙ্গনের সাথে সাথে এ সব মানুষের মন, দেহ সব ভেঙ্গে যায়।
২০১৩ সাল বর্তমান সরকার আগের মেয়াদে থেকে এই নদীর ভাঙ্গন রোধে উদ্যোগ নিলে এ অঞ্চলের মানুষ আশায় বুধ বাধা শুরু করে। যখন নদীর বাঁধের কাজ শেষ হয়, তখন এ সব মানুষ অথই পানি থেকে যেনো একটু তড়ার সন্ধান পায়। যারা দূরে চলে গিয়েছিল তারা আবার ফিরে আসা শুরু করে।
কিন্তু চলতি বর্ষায় ফিলিপনগরের ইসলামপুর থেকে পশ্চিম-উত্তরে নদীর যে ধারাটি বর্তমানে ক্ষিন অবস্থায় বহমান আছে সেই ধারা থেকে বালি কেটে ছোট্ট স্রোতধারাটিকে বড় করে দিচ্ছিলো এক শ্রেনির অসৎ, সমাজ বিরোধী ডাকাত প্রকৃতির লোক। এই পদ্মানদী থেকে বালি উত্তোলনে র্ফিলিপনগরের মানুষ আশঙ্কা করছিল ইসলামপুরের স্রোতধারাটি বড় হয়ে যাবে, বড় নদী হয়ে যাবে। এর ফলে ফিলিপনগরে পদ্মার ভাঙ্গন রোধে দেয়া স্থায়ী বাঁধের নীচে বড় নদীতে পরিনত হবে। আর ভর মৌসুমে বন্যার পানিতে আবার বাঁধ ভেঙ্গে যাকে। ভেঙ্গে যাবে মানুষের ঘর-বসতি, সব কিছু। এ আশঙ্কা থেকে বার বার প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষনের চেষ্টা করা হলেও কোন কাজ হয়নি।
অবশেষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এই বালি কাটার বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে। এর ফলে ফিলিপনগরের মানুষের মাঝে স্বস্তি ফিরে আসে। তবে অনেককেই বলতে শোনা গেছে আরও মাস দুয়েক আগে এ ধরণের অভিযান পরিচালনা করলে ফিলিপনগর বাসীর মনে যে ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে তা হতো না।